নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশে বিভিন্ন সময় হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটে। গত ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) থেকে তেমনিভাবে চুরি হয় একটি নবজাতক। তবে পুলিশের তৎপরতায় সেই নবজাতক চুরির ঘটনায় বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শিশুটিকে উদ্ধারের পর পাচারের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিনজনের মধ্যে একজন নবজাতকের নানী।
জানা গেছে, গর্ভবতী তানিয়া বেগমকে তার স্বামীর বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিলে তিনি মায়ের বাড়িতে অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে তানিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে দারিদ্রতার কারণে তানিয়ার মা মোছাঃ রাবেয়া খাতুন (৩২) মেয়ের ঠিকমত চিকিৎসা খরচ বহন করতে অপারগ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে রাবেয়া পূর্ব পরিচিত মোঃ হারুন (৫৫) ও মোনোয়ারা বেগম(৩৮) এপর্যায়ে তানিয়া বেগমের গর্ভে থাকা শিশুটিকে টাকার বিনিময়ে পাচারের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী রাবেয়া খাতুন মোঃ হারুন ও মোছাঃ মনোয়ারা বেগম এর কাছ থেকে ৫৭ হাজার টাকা অগ্রীম গ্রহণ করে।
এক সময় তানিয়ার গর্ভের শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু নবজাতক শিশুটি অসুস্থ হলে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য নবজাতকের মা তানিয়া ও নানী রাবেয়া খাতুন নবজাতক কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসাতালের ৩২ নং শিশু ওয়ার্ড -৩২ ভর্তি করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ অক্টোবর রাবেয়া নবজাতকের মাকে কৌশলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর নবজাতককে হাসপাতাল থেকে সবার অগোচরে মোঃ হারুন (৫৫), ও মোছাঃ মনোয়ারা বেগমের কাছে হস্তান্তর করে দেয়। এরপর শিশুটির নানী রাবেয়া হাসপাতাল থেকে শিশুটি হারিয়ে গেছে বলে হা হুতাশ শুরু করে। এই ঘটনার পর নবজাতকের মা তানিয়া নগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানায় নবজাতক চুরির অভিযোগে মামলা করেন।
পাঁচলাইশ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, আমরা নবজাতক চুরির মামলাটি গ্রহণের সাথে সাথেই শিশুটিকে উদ্ধার ও পাচারে জড়িতদের গ্রেফতারে লক্ষ্যে অভিযানে নামি। এক পর্যায়ে নবজাতকের নানীকে আমরা নিবিড় ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে নবজাতক চুরির ঘটনা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ (৬ অক্টোবর) পাঁচলাইশ মডেল থানা একটি টিম হাটহাজারী থানাধীন ফতেহাবাদ এলাকা থেকে মোঃ হারুন ও মোছাঃ মনোয়ারা বেগমের হেফাজত থেকে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে।”
গ্রেফতারকৃত নানী ও অপর দুইজনকে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ১০(২) ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত নবজাতক শিশুটি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে জানিয়েছেন ওসি পাঁচলাইশ।
Leave a Reply