বিশেষ প্রতিনিধি: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় শিক্ষকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহতের ঘটনার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টাকেও বিনাশর্তে পদত্যাগ করার দাবি জানান। চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন, কন্ট্রোলার ভবন, একাডেমিক ভবন- বি সি ডি এবং ই-তে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর দেড়টায় চলমান আন্দোলনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় বিভিন্ন ভবনে তালা দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, রোববার শাবির আইআইসিটি ভবনের সামনে অবস্থানকালে বিনা উস্কানিতে সুপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নিষ্ঠুর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের নির্বিচার লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের স্বীকার হন নিরস্ত্র শিক্ষার্থীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী; যাদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। তারা বলেন, এর মধ্যে কারও মাথা ফেটেছে, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড জখম হয়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন অনেকে। ছাত্রীদের ওপর অসম্ভব নিষ্ঠুরভাবে পুরুষ পুলিশ সদস্যরা বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে। ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক পুলিশ ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের ওপর এমন নৃশংস হামলার ঘটনা নজিরবিহীন এবং এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বিশেষ করে উপাচার্য যেভাবে মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছে তা একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের হতবাক করেছে, তেমনিভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করেছে এই অথর্ব, স্বৈরাচারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উৎখাত করতে। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বর্তমানে কোনো শিক্ষার্থীই এই উপাচার্য দায়িত্বে থাকাকালে ক্যাম্পাসে নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা হামলার মূল মদদদাতা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করে তাকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টাকেও বিনাশর্তে পদত্যাগ করতে হবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে প্রশাসনের হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ তাদের হলছাড়া করতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের হলছাড়া করা বা আন্দোলন বানচাল করার যেকোনো প্রচেষ্টা শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবেন। এছাড়াও গত দিনের হামলার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করছে, অবিলম্বে ক্যাম্পাসে মোতায়েনকৃত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই। উপাচার্যের পদত্যাগের আগপর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, আমাদের দাবি আদায়ের আগপর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এক দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
Leave a Reply