নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের প্রয়াত অসহায় মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার মৃত্যুর পর থেকে তার পরিবার অসহায় হয়ে মানবেতর ভাবে জীবনযাপন করছিল। মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্ত ভাতার ওপর নির্ভর করে একমাত্র ছেলে ও তার স্ত্রীকে নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছিলেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আজিরুন বেগম।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার স্ত্রী সন্তান ও পরিবার সদস্যদের অসহায়ত্বের বিষয়টি গণমাধ্যমে জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত অসচ্ছল বীরমুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর তৈরি করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক। বুধবার (১১ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে এ পরিবারের অসহায়ত্ব ও তাদের জরাজীর্ণ ঘরটি প্রত্যক্ষ করেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক। এ সময় তিনি জানান,একটি জাতীয় দৈনিকে পরিবারটির করুণ কাহিনী প্রকাশ হলে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান-এর দৃষ্টিগোছর হয়। উনার নিদের্শনায় মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত একটি ঘর প্রদানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।উল্লেখ্য,গত ৪ নভেম্বর প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামে জরাজীর্ণ ঘরে ঢুকে পড়া বৃষ্টির পানির মধ্যেই পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। টিনের তৈরি একমাত্র জরাজীর্ণ ঘরে ভোগান্তি নিয়ে চলছে তাদের বসবাস। কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার বাড়ি। স্বামীর মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা। দিয়ে চলছে স্ত্রী আজিরুন বেগমের পরিবার। ছেলে কামাল মিয়া ও পুত্রবধূকে নিয়ে সংসার আজিরুন বেগমের। বাড়িতে টিনের তৈরি একটিমাত্র ঘর বসবাসের অনুপযোগী। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে সেটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শফিক মিয়ার ছেলে কামাল মিয়া বলেন, আমরা অত্যন্ত গরিব শ্রেণির মানুষ। দিন আনি দিন খাই। বাড়ির একমাত্র ঘরটি বেহাল হওয়ায় অতিকষ্টে দিন পার করছি। সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ির জন্য আবেদনও করেছি। একজন অসহায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য হিসেবে এ বিষয়ে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অসহায় এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে শান্তিতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেবেন- এমনটি প্রত্যাশা মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শফিক মিয়ার স্ত্রী আজিরুন বেগমের। সেই সঙ্গে দ্রুত স্থায়ী আবাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আজিরুন বেগম।
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আমার স্বামীর আশা পূরণ হলো না। এর আগেই তিনি মারা যান। একটি পাকা ঘর নির্মাণ হলে আমার স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে। স্থানীয় আরেক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলী বলেন, মরহুম মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার বসবাস করার ঘরটি একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এখানে বসবাস করা খুব কঠিন আর কষ্টের।
এ ব্যাপারে রহিমপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, তাদের ঘরের বেহাল অবস্থার কথা আমি জেনেছি। সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসান প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর এসেছে তাই তার আওতায় আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরটি তৈরি করে দেব।
Leave a Reply