অগ্রযাত্রা সংবাদ: শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কর্মসূচির আওতায় ৯টি ইউনিয়নে ৯টি ও পৌরসভার ৯টি টিকাদান কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ১৮টি কেন্দ্রে একযোগে গণটিকা প্রদান করা হয়েছে। এসব টিকা কেন্দ্রে মোট ৭ হাজার ২শ’ জনকে প্রথম ডোজের গণটিকা প্রদান করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়- উপজেলার প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে টিকা গ্রহীতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রথমদিনের গণটিকা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে টিকা গ্রহণ করতে পেরে সাধারণ মানুষ খুশী। পুলিশ, আনসার, গ্রামপুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতিতে উপজেলার সবক’টি কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়।
টিকা নিতে আসা রহিমপুর ইউনিয়নের মির্তিঙ্গা চা-বাগানের মানিক বর্ধন, রাজন তাঁতী, পতনঊষার ইউনিয়নের রেখা রানী দেবী, আমেনা বেগম বলেন- আমারা পরিবার নিয়ে নিজ গ্রামেই টিকা দিতে পেরেছি। ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা ধন্যবাদ জানান।
ভোট কেন্দ্রের মতোই টিকা নিতে লোকজনকে লাইন ধরতে দেখা গেছে প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে। উপজেলার আদমপুর তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকেই টিকা নিতে নারী-পুরুষ লাইনে দাঁড়ায়।
পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমদ বাবু জানান- ভোট কেন্দ্রে যেমন মানুষ ভোট দিতে এসে লাইনে দাঁড়ায়, তেমনি টিকা নিতেও মানুষের ভিড় বাড়ায় লাইন করে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম চালানো হয়।
সকাল ১১টার দিকে রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগান টিকা কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন- মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এ সময় কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, কমলগঞ্জ পৌরসভা ভবন কেন্দ্র’সহ বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম. মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ’সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলার টিকা কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই করোনা টিকা গ্রহীতাদের উপচে পড়া ভিড় ও দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৯টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৪শ’ জন ও পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রে ১৮শ’ জন’সহ উপজেলায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মোট ৭ হাজার ২শ’ জনকে গণটিকা প্রদান করা হয়।
বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনকালে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ হাসান সাংবাদিকদের জানান- সবাইকে পর্যায়ক্রমে টিকা গ্রহণ করতে হবে। টিকা গ্রহণ করে ২য় ডোজের জন্য অবশ্যই টিকার কার্ড সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। এ সময় তিনি টিকা গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত মাস্ক পরিধানের আহবান জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম. মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন- স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রথমদিনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে টিকা নিতে পেরে সাধারণ মানুষ খুশি হয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে টিকা গ্রহিতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল।
কমলগঞ্জের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুন্সীবাজার কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় টিকাদান কেন্দ্রে উপজেলা কৃষকলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন।