(চাঁপাইনবাবগঞ্জ ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার আসামির জামিন হওয়ায় বাদিনী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।ঘটনার উল্লেখিত মামলার বিবরণে জানা যায়, গৃহবধূর শাশুড়ি রেহেনার (৪০) সাথে রবিউল ইসলামের ইতিপূর্বে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। বাড়িতে আসা যাওয়ার ফলে ভালো সম্পর্কের জের ধরে রেহানার ছেলে হৃদয়ের সাথে ওই গৃহবধূর বিয়ে দেওয়া হয়।
এক সময় কাজের জন্য গৃহবধূর স্বামী হৃদয় কাজের জন্য জেলার বাইরে যায়। রবিউল ইসলাম রবুর কুনজর পড়ে গৃহবধূর উপর। এক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করে শাশুড়ি রেহেনা।খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে গৃহবধূকে অচেতন করে রবিউল ইসলাম রবু তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি জেনে গেলে, গৃহবধু তার শাশুড়ির কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চায়। রবিউল ইসলাম রবু তার শ্বাশুড়ীর
সহযোগিতায় গৃহবধূকে হুমকি ধামকি দেয়। একপর্যায়ে গৃহবধু তার স্বামীকে বিষয়টি জানায়। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। গত ১৬ মে তার স্বামী গৃহবধূকে তার বাবার বাড়ি রেখে আসে। এ সময় সে ভীষন অসুস্থ ছিল। শারিরিক ও মানসিকভাবে
বিপর্যস্ত হয়ে এতদিন বিষয়টি কাউকে জানায় নি। দীর্ঘদিন বাবার বাড়িতে থাকার ফলে মায়ের মনে সন্দেহ হয়। তখন গৃহবধূ বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানাতে বাধ্য হয়। গত ১৪ আগষ্ট শনিবার পুলিশ রবিউল ইসলাম রবুকে আটক করে নিয়ে যায়। পরেরদিন ১৫ আগস্ট গোমস্তাপুর থানায় গৃহবধূ রবিউল ইসলাম রবু ও শাশুড়ি রেহানাকে আসামি করে গোমস্তাপুর থানায় মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলাম রবু রহনপুর পৌর যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক বলে জানা গেছে। গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে গোমস্তাপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ৩০ ধারায় মামলা নাম্বার -১০, তারিখ: ১৫-০৮-২০২১ এ মামলার আসামির জামিন আবেদনের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জজ কোর্টে গত ৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য ছিল।বাদিনীর পক্ষে কোন উকিল না থাকায় বিজ্ঞ আদালত আসামীর জামিন মঞ্জুর করেন।এ খবর শুনামাত্র বাদিনী আদালতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তারপর তারা মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে সেবা-সুশরা করে। তারপরেও বারবার মূর্ছা যায়। কোন উপায়ান্তর না দেখে মেয়ের বাবা ৬ সেপ্টেম্বর মেয়েকে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
মেয়ের পিতা জানান, দেশের আইন অর্থশালীদের জন্য। মামলার আসামি জামিন হওয়ার পর তারা আমাদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।এসব শুনে আমার মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
মেয়ের মা জানান, আমার মেয়েটির সাথে যে আচারণ করা হয়েছে। কিভাবে মামলার ২১ দিনের মাথায় আসামীর জামিন হয়?আমরা খুব গরীব তাই টাকার কারণে আমাদের জন্য উকিলের ব্যবস্থা করতে পারিনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর পিপি মহোদয়ের সাথে আদিনা দাদনচক তার বাসায় গিয়ে দেখা করে অনেক কাকুতি মিনতি করে বলেছিলাম, আমাদের মামলার বিষয়ে আপনি একটু দেখবেন এবং জামিনের বিরোধিতা করবেন। কিন্তু তিনি জামিনের বিরোধিতা করেননি। আসামি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আসামির জামিনের জন্য পথ সুগম করে দিয়েছেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড.নাজমুল আজম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার অনেক অসংগতির কারণে আসামি জামিন পেয়ে গেছেন। আপনারা উচ্চ আদালতে যান।