নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান (৩৫) হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত ভাড়া করা মাইক্রোবাস জব্দ করেছে পুলিশ। একই সাথে মাইক্রোবাস চালক আমির হোসেন ওরপে হীরাকে (৪০) আটক করা হয়েছে।
সোমবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মাইক্রোবাস জব্দ ও চালককে আটক করেছে।
এদিকে সিলেটে নিহত ব্যবসায়ী নেতার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেলে মরদেহ চৈত্রঘাট বাজারে আনা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় চৈত্রঘাট বাজারে নামাজের জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এ ঘটনায় সোমবার কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চৈত্রঘাট এলাকায় ধলাই নদীর বালু উত্তোলন ও বাজারের দোকান নিয়ে প্রভাবশালী দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বালুমহাল দখল নিয়ে গত দেড় মাসে রহিমপুর ইউনিয়নে দুটি পক্ষের মধ্যে তিনবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও থানায় মামলা হয়েছে। কিছুদিন আগে নাজমুল এবারের নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে অংশ নেবে বলে এলাকায় ঘোষণা দেন। পূর্বের বিরোধ ও নির্বাচনের প্রার্থীতা নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একটি মাইক্রোবাসযোগে এসে দুর্বৃত্তরা চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও রহিমপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে তার বাসার সম্মুখে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে সন্ধ্যা ৭টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকে চৈত্রঘাট বাজার এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিক্ষুব্ধ জনতা একই এলাকার প্রতিপক্ষ জুয়েল আহমদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
আহতাবস্থায় নাজমুল এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়ায় তার ওপর হামলা হয়েছে। ফেসবুকের নিজ আইডিতে লাইভে নাজমুল হাসান তার ওপর হামলায় জড়িতদের নাম প্রকাশ করেন। ভিডিওতে তিনি ছুরিকাঘাতের সময় তোফায়েল, রাসেল, মাসুদ, তফজ্জুল নামে চারজনকে চিনতে পেরেছেন এবং অন্যদের চিনতে পারেননি বলে জানান।’
কমলগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা সোমবার বিকেলে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সময় আনা মাইক্রোবাসটি ভাড়া করা হয়েছিল। আটক চালক জানিয়েছেন, হত্যাকারীরা ঘটনাস্থলে নামার পর তাকে পাশে কোথাও থেকে চা খেতে বলেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি দেখেন, মাইক্রোবাসের যাত্রীরা একজনকে কোপাচ্ছেন। এরপর তিনি খালি মাইক্রোবাস নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘চৈত্রঘাট বাজারটি সিসিটিভি টিভির আওতাভুক্ত। তাই তদন্তের জন্য ফুটেজ দেখা হবে। ঘটনায় জড়িত ওই চারজনকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।