নির্মল এস পলাশ ঃ শিবচতুর্দশী উপলক্ষে মণিপুরী দিবারাস কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর শিববাজারে ঐতিহ্যবাহী জাগ্রত শিব মন্দির সম্মুখে রাখাল নৃত্যের মাঠে ( ০১ মার্চ মঙ্গলবার) দুপুর ১২ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হবে।
মহাশিবরাত্রি ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। সমুদ্র মন্থনে ওঠা বিষ শিব নিজের কণ্ঠে রেখে মানব্জাতিকে সেই বিষের সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করে। শিবরাত্রি হল মানুষের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন মহাদেবের প্রতি তার বিষপান করে মানবজাতিকে রক্ষা করার কথা মনে রেখে।আর অন্যটি হল ব্রহ্মা বিষ্ণুর মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই তে শিবের জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে আবির্ভাব ও সেই লড়াই এ মধ্যস্থতা করাকে স্মরণ করে শিবরাত্রি পালন করা হয়।
রাসনৃত্য মণিপুরী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্রুপদী ধারার এক অপূর্ব শৈল্পিক সৃষ্টি। রাসলীলায় যে নিত্য পরিবেশিত হয় সেটাই রাসনৃত্য নামে পরিচিত। এই রাস উৎসব বাংলাদেশের মণিপুরী সবচাইতে বড় ধর্মীয় এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উৎসব। প্রতিবছর কার্তিকের পূর্ণিমা তিথিতে মাধবপুর জোড়ামণ্ডপে রাস উৎসব পালিত হয় ।
মণিপুরী রাস ৫ ভাগে বিভক্ত। যথা- মহারাস, বসন্ত রাস, কুঞ্জ রাস, দিবা রাস, নৃত্য রাস। এর মধ্যে সবচাইতে জাঁকজমকপূর্ণ ঐতিহ্যের শ্রেষ্ঠ ও প্রধান হলো মণিপুরী মহারাসলীলা।
দিবারাস হলো মণিপুরী রাসনৃত্যের একটি ধারা। দিনের বেলায় শুরু হয়ে সুর্যাস্তের আগেই শেষ হয়ে যায় বলে এই রাসলীলাকে দিবারাস - মণিপুরী ভাষায় বেলীরাস (বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষায় সূর্যকে বলা হয় বেলী) বলা হয়। সাধারন রাসলীলার সাথে এর আরেকটি পার্থক্য হলো এর পোষাক-পরিচ্ছদ, গান ও মুদ্রার ধরন রাসলীলা থেকে কিছুটা ভিন্ন। মণিপুরী মেয়েরা মণিপুরী পোশাক চাকচাবী পরণের বস্ত্র ও ইনাফী - ওড়না এবং অঙ্গে বিভিন্ন সাজসজ্জা - অলংকার - অলংকরণ ধারা সজ্জিত হয়ে। শ্রাস্ত্রীয় বিধি - নিয়ম অনুসরণ পূর্বক গোপী - যারা অংশগ্রহণ করেন ও রাধা - কৃষ্ণর অংশগ্রহণে নৃত্য ওস্তাদের নির্দেশনা অনুসারে অনুষ্টিত হয়ে থাকে। যে কোন ধর্মীয় উৎসব বা বিশেষ দিবসে নিজের মাবতকল্পে দিবারাস অনুষ্টিত হয়। দিবারাসের আয়োজক উজ্জ্বল সিংহ । বৃন্দা ভুমিকায় রিনু সিনহা এই দিবারাসের রূপায়ন করবেন। সাথে অন্যান্য গোপী এবং রাধা - কৃষ্ণ নৃত্যে বিশেষায়িত ফুটিয়ে তুলবেন।
কাগজের কারুকার্য দিয়ে সাজানো হয় রাসমন্ডলীতে বৃন্দা, রাধা - কৃষ্ণ ও গোপীদের নৃত্যে মণিপুরী দিবারাস উজ্জ্বলতম আঙ্গিক প্রদর্শিত হবে। আয়োজক উজ্জ্বল সিংহ ভক্তবৃন্দ ও সকল সাংস্কৃতিক অনুরাগীকে দিবারাস উপভোগের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।