বিশেষ প্রতিনিধি ঃ আজকাল যেভাবে সাংবাদিক পরিচয়ের ব্যবহার বেড়েছে এবং সাংবাদিকতার অপব্যবহার চলছে তাতে করে পেশাদার সাংবাদিকরা এখন বেশ বিব্রত। কিছু টাকা খরচ করে যেনতেন একটা আইডি কার্ড কিনে সাংবাদিক বনে যাচ্ছেন অনেকে। আবার কেউবা এ পেশায় কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই একটি মানহীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল কিংবা ইউটিউব খুলেই বনে যাচ্ছেন সাংবাদিক। এরা কিছু অসৎ কর্মকর্তা কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে গুনগান গেয়ে বাহাবা কুঁড়াচ্ছেন। সহযোগিতা করছেন অসৎ কাজগুলোকে পাকাপোক্ত করার! একসময় এদের ছত্রছায়ায় মিলেমিশে একাকার। গড়ছেন শক্তিশালী জোট। তখন প্রকৃত সাংবাদিকরা পড়ছেন হুঁমকির মুখে।
এদের মধ্যে কেউবা মাদক বিক্রেতা ও ক্রেতাকে সহযোগিতা করছে সাংবাদিকতাকে পূঁজি করে। বিশেষ করে সমাজের অপরাধীরা এমন কাজে জড়াচ্ছেন অহরহ। নিজের ও তার সম্রাজ্যের অপরাধকে আড়াল করতে কিংবা ঢাকতে সাংবাদিকতা নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করছেন তারা। আবার এদের কাউকে কাউকে সহযোগিতা করছে আন্ডার গ্রাউন্ড কিছু পত্রিকা কিংবা অনলাইন পত্রিকা। অশিক্ষিত,স্বশিক্ষিত লোকজনও আজকাল সাংবাদিক পরিচয়ে গলায় কার্ড ঝুলিয়ে নানা অপরাধে জড়িত হচ্ছে। এভাবে অপকর্ম বেড়ে সমাজ যাচ্ছে রসাতলে।
এসব অপেশাদার কথিত সাংবাদিকরা অনেক ক্ষেত্রে অপকর্ম করতে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকে। এদের কারণে পেশাদার সাংবাদিকদের মর্যাদা ধূলায় ভুলন্ঠিত হচ্ছে।
ব্যাঙের ছাতার মতো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, রাস্তার মোড়ে মোড়ে সম্পাদক এবং অলিগলিতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন চোখে পড়ে। তবে এ পেশায় পেশাগত নিরাপত্তা,মানোন্নয়ন ও মর্যাদাবোধ গড়ে তোলা কতটা সম্ভব হয়েছে এসব প্রশ্নের উত্তর অজানাই থেকে যায়!
বর্তমানে সাংবাদিকতায় গুণগতমান, পেশাদারিত্ব ও নীতিমালার কোনো বালাই নেই। ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যেখানে সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল, আইপি টেলিভিশন ও সংবাদপত্র।
আর এসব প্রতিষ্ঠান শুধু পরিচয়পত্র ও বুম ধরিয়ে দিয়েই বেতন-ভাতার দায় সারে। জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে খোদ রাজধানীতেও মানা হচ্ছে না সম্পাদক নিয়োগের নিয়মও। আর এই সুযোগে অপরাধীরা সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে ব্যাবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। আর তাই এখন ভুয়া সাংবাদিক বেড়েই চলছে। আর এদের লাগাম টানতে না পারলে একসময় এ পেশার সম্মান কিংবা আদর্শ সংকটে পড়বেনা; এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
লেখক:
হারুন-অর-রশীদ, সংবাদকর্মী, ফরিদপুর।