অগ্রযাত্রা সংবাদ ঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অপ্রতিরোধ্য গতিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন আর কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কখনো কেউ ছিনিমিনি খেলতেও পারবে না। তিনি আরও বলেন, যে আলোর পথে যাত্রা শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেই পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ। আলোর পথে যাত্রা শুরু করার কারণেই দেশের মানুষের প্রতিটি ঘরকে আলোকিত করার সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। শনিবার সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চার দিনব্যাপী ‘জয় বাংলার জয়োৎসব’ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই গতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশ নিয়ে আর কোনো খেলা কেউ খেলতে পারবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কীভাবে চলবে তার রূপরেখা বঙ্গবন্ধুই নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু ’৭৫-পরবর্তী কেউ দেশের উন্নয়নে কাজ করেনি। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে কাজ করছে। দেশের যতটুকু উন্নয়ন তা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে আগামীর সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা দিয়েছি।
সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে উন্নয়নের যাত্রা যদি আপনারা হিসাব করেন-৫০ বছরের মধ্যে ২৯ বছর উন্নয়ন হয়নি। এ সময়টা ছিল পিছুটানা বা পেছনে যাওয়ার সময়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তিনি উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন। আর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন দেশের মানুষ কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া পায়। এরপর ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি। তিনি বলেন, ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছি। আমরা স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করছি। অবকাঠামো উন্নয়ন করে যাচ্ছি। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। তিনি বলেন, আমাদের একটাই চাওয়া-বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। শিক্ষা-দীক্ষা-জ্ঞান, প্রযুক্তি জ্ঞান, বিজ্ঞানে সব দিক থেকে যেন আমরা এগিয়ে থাকতে পারি। মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা তার ব্যবস্থা করেছি।
এর আগে মহান স্বাধীনতা দিবস এবং বছরব্যাপী চলা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী উপলক্ষ্যে স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চার দিনব্যাপী ‘জয় বাংলা জয়োৎসব’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি আয়োজিত ও মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর থিম সংগীত পরিবেশনের পর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে নির্মিত অডিও ভিজুয়াল প্রদর্শন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রান্তে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে তা কিছুক্ষণ উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে গান-কবিতা, মঞ্চ ডিসপ্লের মাধ্যমে বাঙালি জাতির ইতিহাস, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানি হানাদারদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের কিছু খণ্ডচিত্র, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও তার
অবদান তুলে ধরা হয়। দেশবরেণ্য কবি, আবৃত্তি শিল্পী, সংগীত শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা জমকালো এ পরিবেশনায় অংশ নেন।