বিশেষ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মায়ের ঘরে চুরি করতে দেখে ফেলায় নানিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে নাতি। হত্যার পর ঘর থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যায় হত্যাকারী নাতি রাকিব।
এ ঘটনায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা হয়েছে। ফতুল্লার আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ৫ দিনের মধ্যে নিহত আয়েশার (৬১) নাতি রাকিবকে গ্রেফতার করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা গ্রিনরোড এলাকার বাসিন্দা নাছরিনের (৪৭) স্বামী উজ্জ্বল বাহরাইন প্রবাসে থাকাকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার দুই ছেলে বাহরাইন থাকেন। ছোট ছেলে রাকিব ও তার স্ত্রী এবং বৃদ্ধা মা আয়শাসহ প্রবাসে থাকা দুই ছেলের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিজ বাসায় নাছরিন বসবাস করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নাছরিনের ছোট ছেলে রাকিব গার্মেন্টসে কাজ করেন। গার্মেন্টসে কাজ করলেও তার রয়েছে জুয়া খেলার নেশা। এতে গত ডিসেম্বর একটি এনজিও হতে ৬০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন রাকিব। সেই টাকা দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলে হেরে যায়। পরে ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য বিভিন্ন জনের কাছে টাকা ধার চেয়ে ব্যর্থ হয় রাকিব।
এরপর রাকিব তার মায়ের ঘরে চুরি করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। ঘটনার দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি বাসায় কেউ থাকবে না সেটা পূর্ব হতে জানতে পেরে তিনি তার কর্মস্থল গার্মেন্টসে না গিয়ে গোপনে বাসার আশপাশে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা ৭টায় বাসায় প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে আলমারির লক ভেঙে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, নগদ ৩০০ টাকা লুট করে নেয়।
তখন হঠাৎ তার নানি আয়শা বেগম (৬১) বাসায় চলে এসে চুরি করা দেখে অবাক হয় এবং রাকিবের গালে চড়থাপ্পড় মারে। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট লুকানোর অপচেষ্টা হিসেবে হাতে কাপর পেঁচিয়ে পরিত্যক্ত গেঞ্জির অংশ দিয়ে তার নানি আয়শা বেগমের গলা টিপে হত্যা করে। এ ঘটনায় রাকিব আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।