নিজস্ব প্রতিবেদক: পঞ্চম এলডিসি সম্মেলনে অংশ নিতে ৫ থেকে ৯ মার্চ কাতার সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি এলডিসি উত্তরণে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানাবেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর দোহা সফরে যেসব কর্মসূচি থাকছে- ৫ মার্চ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব, সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও এলডিসি গ্রুপের বর্তমান চেয়ার মালাউই-এর রাষ্ট্রপতিও বক্তব্য দেবেন। দুপুরে প্রধানমন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে থাকা তিন এশীয় দেশ, বাংলাদেশ, নেপাল ও লাওস কর্তৃক আয়োজিত ‘Sustainable and Smooth Transition for the Graduating Cohort of 2021’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে বক্তব্য দেবেন।
পরদিন ৬ মার্চ সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘The Rise of Bengal Tiger: Potentials of Trade & Investment in Bangladesh’ শীর্ষক বিজনেস সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। ওই দিন দুপুরে সরকারপ্রধান বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত সাইড ইভেন্ট ‘Investment in Research and Development in LDCs for Smart and Innovative Societies’ এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
ওই সাইড ইভেন্টে মিশর, সিঙ্গাপুর, এস্তোনিয়ার মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং উব্লিউটিও, ইউএন টেক ব্যাংক ফর এলডিসিস-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জিসিসিভুক্ত দেশসমূহ, ইরাক, জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে অংশ নেবেন।
৭ মার্চ মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর ‘Enhancing the participation of Least Developed Countries (LDCs) in International Trade & Regional Integration’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে কো-চেয়ার হিসেবে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। একই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত সাইড ইভেন্ট ‘Global Partnership for Smooth and Sustainable Graduation: Marching towards Smart Bangladesh’-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ওই সাইড ইভেন্টে ডেনমার্কের মন্ত্রী, ইউএনসিটিএডি-এর মহাসচিব এবং উব্লিউটিও, ইউএনআইডিও, ওইসিডিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকবৃন্দ কর্তৃক আয়োজিত কমিউনিটি ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এটিই হবে এলডিসি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শেষ এলডিসি শীর্ষ সম্মেলন। কারণ ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ হবে।
করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। এতে এলডিসি ও উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ওই দেশগুলোর জন্য বড় ধরনের বাধা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশ এই বিষয়গুলো সম্মেলনে উত্থাপন করবে। এছাড়াও ২০২৬ সালের পরেও বাংলাদেশ যে বাণিজ্য সুবিধাগুলো এখন এলডিসি হিসেবে উপভোগ করছে- তা অব্যাহত রাখতে উন্নত দেশগুলির সমর্থন চাইবে।
গণমাধ্যমে সাপ্তাহিক ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোমেসি শাখার মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন বলেন, সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও প্রধানমন্ত্রী খালিদ বিন খালিফা বিন আবদুল আজিজ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যবৃদ্ধির পাওয়া জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে কাতারের সহায়তা চাইতে পারেন। সম্মেলন চলাকালে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলেও জানান সেহেলী সাবরীন।