নিজস্ব প্রতিবেদক: এ বছরের পহেলা আষাঢ় থেকে লাগাতার ভারি বর্ষন ও উজান থেকে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীতে প্রচুর পরিমানে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদী পাড়ের মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার প্রায় ৪০ গ্রামের মানুষ। নদীর তলায় পড়ে থাকা জল মাত্র কদিনের বিরামহীন বৃষ্টিতে দ্রুতবেগে বেড়ে যাওয়ায় পানি প্রায় নদীর তীর ডুবাতে শুরু করেছে।
রোববার ১৮ জুন কুশিয়ারায় বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, রোববার বিকেল ৩ টা পর্যন্ত বিপদসীমার ৭.৮ সে:মি: নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার সদর উপজেলার শেরপুরে সেতুতে এ নদীর বিপদসীমা ধরা হয়েছে ৮.৫৫ সে:মি:। এর আগে নদীতে ভোর ৬টায় ৬.৮৭, বেলা ৯টায় ৬.৯২ ও দুপুর ১২টায় ৭ দশমিক ২ সে:মি: পানি বৃদ্ধির হিসেব করা হয়।
অতি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজার শহর দিয়ে ঘেঁষে যাওয়া মনু নদী-এ পানি বাড়লেও রোববার বেলা ৩টায়, মাত্র ৩ পয়েন্ট পানি কমেছে।
মনু নদীর শহরের চাঁদনীঘাট সেতুতে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১১ দশমিক ৩০ সে:মি:। দুপুর ১২টায় ৯ দশমিক ৯৩ সে:মি: পানির উচ্চতা দেখালেও বেলা ৩টায় ৯ দশমিক ৯০ সে:মি: হিসেব করা হয়।
একদিকে আষাঢ়ের বৃষ্টি বন্ধ না হওয়াতে মৌলভীবাজারের সদর ও রাজনগর উপজেলার কুশিয়ারা নদী পাড়ের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ গেলবারের মত পানি বন্দি হয়ে নানা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
কুশিয়ারা নদীর জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের বকসিপুর, সিক্কাগাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরীখাল,যুগীকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর,কান্দিাগাঁও, জোড়াপুর,গালিমপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, বিলবাড়ি, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুর, আব্দুল্লাহপুর, ছরখারপাড়, রশীদপুর, ইসলামপুর ও সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের সরাবপুর,বাদুরপুর,চাঁনপুর,সুজননগরসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুশিয়ারায় বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে নদী পাড়ের ৩ ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক মাছের খামার তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়া গেল বছরের বন্যায় ঘর-বাড়ি ভাঙ্গার রেষ কাটতে না কাটতেই এবার নদীতে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ার আবারও নদী পাড়ের বহু ঘর বিলীন হতে পারে এবার বন্যায়। এদিকে বন্যার আগাম সতর্ক বার্তা দিয়ে মানুষকে সচেতন হবার তাগীদ দিয়েছে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল রোববার এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানান, বন্যা মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কন্ট্রলরুম খোলা হয়েছে।
প্রবল ঢলে কুশিয়ারার বিপদজনক এলাকা ও মনূ নদের কিনারায় অবস্থিত মৌলভীবাজার শহর আক্রান্ত হলে পাউবোর তাক্ষনিক পদক্ষেপ কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই প্রকৌশলী বলেন, এমন অঘটন ঘটলে আমাদের পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ মজুদ আছে। তাছাড়া মনু নদ পাড়ের মৌলভীবাজার শহরে ইতিমধ্যেই আমরা জিও ব্যাগ ফেলে দিয়েছি।