আব্দুল বাছিত খান:
কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামের একটি দূর্গম পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানায় কাউন্টার টেরিজম ইউনিট প্রধানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন হিলসাইড’ পরিচালনা করা হয়।
উক্ত অভিযানে কোন হতাহতের ঘটনা ছাড়াই ৪ জন পুরুষ জঙ্গি ও ৬ জন নারী জঙ্গীকে আটক করা হয়। এসময় জঙ্গীদের সাথে থাকা তিন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।শুক্রবার ১১ আগস্ট রাত ৮ টা থেকে কুলাউড়ার কর্মধার পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল।
ওই রাতের অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী পুলিশ কমিশনার সফিক। সারারাত বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে কাউন্টার টেরিজম ইউনিট ও মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ।
পরে শনিবার ১২ আগস্ট সকালে মূল অভিযান ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান এর নেতৃত্বে সোয়াড সহ ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে ৪ ঘন্টা অভিযানে বিনা রক্তপাতে ১০ জন জঙ্গী আটক ও ৩ জন শিশুকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়।
এলাকাটি ঘিরে রাখার পূর্বেই কিছু জঙ্গী সেখান থেকে তাদের মূলহোতাসহ পালিয়ে যায়। তারা প্রায় ১ মাস থেকে উক্ত এলাকায় জায়গা কিনে ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করে। তারা পাহাড়ে গহীন অরন্যে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিত বলেও জানাগেছে।
দুপুরে টাট্টিউলী এলাকায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান প্রেস ব্রিফিং করে জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে তাদের নজরদারী ছিল ওই এলাকায়।
জঙ্গি আস্তানা থেকে ২.৫ কেজি বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, কমান্ডো বুটসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি, ছুরি-রামদাসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র এবং নগদ ৩ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো: মনজুর রহমান, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালেক সহ পুলিশের উর্ধ্বোতন কর্মকর্তারা।
আটককৃত জঙ্গীরা হলো- শরীফুল ইসলাম (৪০), পিতা-ওমর আলী, মাতা-ছমিরুন, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা ও জেলা-সাতক্ষীরা, হাফিজ উল্লাহ (২৫), পিতা-আবুল কাশেম, মাতা-জহুরা খাতুন, সাং-কানলা, থানা-ইটনা, জেলা-কিশোরগঞ্জ, খায়রুল ইসলাম (২২), পিতা-নজরুল ইসলাম, মাতা-সানোয়ারা বেগম, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ। রাফিউল ইসলাম (২২), পিতা-সাইফুল ইসলাম, মাতা-রেবা সুলতানা, গ্রাম-মাইজবাড়ী, থানা-কাজীপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ, মেঘনা (১৭), স্বামী-খায়রুল ইসলাম, পিতা-মানিক মিয়া, মাতা-আলেয়া বেগম, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ, আবিদা (১২ মাস), পিতা-খায়রুল ইসলাম, মাতা-মেঘনা, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ, শাপলা বেগম (২২), পিতা-মজনু মল্লিক, স্বামী-আ: ছত্তার, মাতা-আলেয়া বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা, জুবেদা (১৮ মাস), পিতা-আ: ছত্তার, মাতা-শাপলা বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা, হুজাইফা (০৬), পিতা-আ: ছত্তার, মাতা-শাপলা বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা, মাইশা ইসলাম (২০), পিতা-সাইদুল ইসলাম, স্বামী-সোহেল তানজীম রানা, গ্রাম-চাদপুর (পিতার বাড়ী), থানা ও জেলা-নাটোর, মোছা: সানজিদা খাতুন (১৮), পিতা-আব্দুল জলিল, স্বামী-সুমন মিয়া, গ্রাম-নিজবলাই, থানা-শরিয়াকান্দি, জেলা- বগুড়া, আমিনা বেগম(৪০), পিতা-জলমত খা, স্বামী-শফিকুল ইসলাম, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা ও মোছা: হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০), পিতা-শফিকুল, মাতা-আমিনা বেগম, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা।
পরে এন্টি টেররিজমের বোম্ব ডিসপজেল ইউনিট বোমা ও ডেটোনেটর স্থানীয় আছকরাবাদ খেলার মাঠে ধ্বংশ করে।