কক্সবাজার ঃ কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ঈদগাঁও ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জ এলাকা থেকে আরও একটি হাতির গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জের পুর্নগ্রাম বনবিটের গামারি ঘোনা ঝিরি এলাকায় মৃত হাতিটিকে পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। স্থানীয় আবদু শুক্কুর নামের এক চাষি জানান, ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জের পুর্নগ্রাম বনবিটের ভিতরে প্রতিদিন হাতির পাল বিচরণ করে। গত বৃহস্পতিবার গামারি ঘোনা ঝিরি এলাকায় একটি মৃত হাতি পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাতিটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির দাগ রয়েছে। কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, “কক্সবাজারের বিভিন্ন বনাঞ্চলে গত দুয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিকভাবে হাতির মৃত্যু হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে অনেকে এ হাতি হত্যা করছে। অনেকে বিদ্যুৎপৃষ্ট করে, অনেকে গুলি করে আবার অনেকে ফাঁদ দিয়ে হাতি হত্যা করছে। একইভাবে এই হাতিটিকে গুলি করে হত্যা করেছে একটি সিন্ডিকেট। চক্রটি বনের ভিতরে গিয়ে একটি হাতিকে গুলি করে। অপরদিকে বন্যহাতি শিকারিরা দাঁত সংগ্রহের জন্যও হাতিটিকে গুলি করতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের কালাপাড়া গ্রামের বাবুল (৩৫) ও আরাফাতুল ইসলাম প্রকাশ সোনামিয়া (৩০) হাতিকে গুলি করতে পারে। এর আগেও তারা হাতি হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ভোমরিয়া ঘোনা ও ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তারা যৌথভাবে ২২ মার্চ সোমবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা বলছেন, হাতিটিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং বন্যহাতি হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এর আগেও একই এলাকায় বন্যহাতি গুলিতে মারার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম বলেন, “মৃত হাতিটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাতিটির গায়ে গুলির দাগ রয়েছে। আমরা আসামি শনাক্ত করছি। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কক্সবাজারে হাতি হত্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরসহ গত ৪ বছরে কক্সবাজার জেলায় ১৪টি হাতি মারা গেছে। গত ৬ মাসে শুধু কক্সবাজারেই মারা গেছে ৫টি বন্যহাতি। সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ উখিয়ার মনখালী খালের উৎপত্তিস্থল টেকনাফ অংশে পানির ধার থেকে একটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ।
Leave a Reply