কক্সবাজার প্রতিনিধি ঃ
ঢাকা থেকে কক্সবাজার বেড়াতে আসা গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় আটক করা হয়েছে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে। এছাড়া ৪ জনকে এজাহারভুক্ত করে মামলা রেকর্ড হয়েছে।
মামলায় হোটেল ম্যানেজারকে ৪নং আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি এ মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২-৩ জনকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী।
মামলার অন্য আসামিরা হলো- কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার আশিকুল ইসলাম আশিক, ইসরাফিল জয় ওরফে জয়া ও মেহেদী হাসান বাবু।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেলটিতেই বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। স্বামী-সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, কক্সবাজার শহরের লাবনী পয়েন্ট থেকে তুলে নিয়ে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে দুই দফা সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তিন যুবক। প্রথমে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তিনজন। পরে ওখান থেকে হোটেল জিয়া গেস্ট ইনে তোলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুমের বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ধর্ষণকারীরা।
এরপর জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খুলেন তিনি। তারপর ফোন দেন পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯ নম্বরে। পুলিশ তাকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার না করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। এরপর র্যাবকে ফোন করে জানালে র্যাব ১৫-এর একটি টিম এসে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে স্বামী-সন্তান ও গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকেই শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও মামলার আসামি হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কক্সবাজার সদর থানার মাধ্যমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সোপর্দ করা হবে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহীন মো. আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ওই নারীকে ওসিসিতে রাখা হয়েছে। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। হাসপাতালে তাকে দুই থেকে তিন দিন রাখা হতে পারে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত বিপুল চন্দ্র দে জানান, ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশকে।
Leave a Reply