নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহের ত্রিশালে টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া দুই গরিব মেধাবী সামিয়া আক্তার ও ফাতেমা আক্তারের দায়িত্ব নিল ত্রিশাল পৌর ছাত্রলীগ। উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাটিপাড়া গ্রামের সামিয়া আক্তার ও ফাতেমা আক্তার পড়ালেখা করার খুবই ইচ্ছা। সামিয়া বড় হয়ে হতে চায় মানুষ গড়ার কারিগর মহান পেশা শিক্ষকতা। আর ফাতেমা আক্তার উচ্চশিক্ষিত হয়ে করতে চায় সাধারণ মানুষের সেবা। বয়সে ছোট হলেও দেখতে শুরু করেছে স্বপ্ন। দুজনেই সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী। কিন্তু স্বপ্নপূরণ হওয়ার আগেই শেষ হতে চলছিল। কারণ তাদের বাবাদের দিনমজুরের কাজ করে পড়ালেখা চালানো সম্ভব নয়।করোনার কারণেও বন্ধ ছিল তাদের পড়ালেখা। স্কুল খোলার পর বাবাদের সামর্থ্য নেই ভর্তি করার। সেই সময় তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় ত্রিশাল পৌর ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সামিয়া ও ফাতেমাকে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করেন দুখু মিয়া বিদ্যানিকেতন স্কুলে। তাদের স্কুল ড্রেস, বই, প্রাইভেট পড়ার খরচ ও যাতায়াত ভাড়াসহ সব কিছু তারা বহন করবেন। ছাত্রলীগ জানায়, দুই মেধাবীর স্বপ্ন তারা পূরণ করবে। যতদূর পড়তে চায় তাদের পড়ালেখা করানো হবে। সামিয়া-ফাতেমার দাদি মাজেদা ও আয়েশা খাতুন জানান, আমাদের নাতনিদের পড়ালেখার খুব ইচ্ছা। কিন্তু টাকার অভাবে তাদের পড়াতে পারিনি। আমাদের ছেলেরা দিনমজুর ও রঙ মিস্ত্রির কাজ করে। থাকার জায়গা ছাড়া কোনো জমি নেই। অনেক সদস্যের সংসার কোনো রকমে চলতে হয়। পড়ালেখা করার খরচ দেবে কোত্থেকে। ফাতেমারা চার বোন, এক ভাই। ফাতেমা তৃতীয় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। সামিয়ারা দুই ভাই, এক বোন। সামিয়া সবার বড়। এত বড় সংসার তাই তাদের লেখাপড়া বন্ধ ছিল। এখন ছাত্রলীগের ভায়েরা তাদের পড়ালেখার খরচ দিবে বলেছে। কান্নাঝরা কন্ঠে দাদীরা বলেন, এখন নাতনিদের স্বপ্ন পুরন হবে। পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন সরকার জানান, গরিব মেধাবী সামিয়া ও ফাতেমা পড়াশোনা করতে পারছে না এ খবর আমার কাছে আসে। তার পর আমি তাদের খবর নিয়ে স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করি। তাদের যা লাগবে ছাত্রলীগ দেবে। তাদের স্বপ্নপূরণ করার দায়িত্ব আমাদের। ভালো করে পড়াশোনা করলে যতদুর পড়তে চায় ছাত্রলীগ সহযোগিতা করবে। দুখু মিয়া বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, সামিয়া ও ফাতেমকে স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নিয়ে আসে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। ছাত্রলীগ তাদের ভর্তিসহ সকল খরচ তারা বহন করবে। মেধাবী এ শিক্ষার্থীদের জন্য আমার পক্ষ থেকেও যতটুকু করা সম্ভব তা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীদের জন্য কাজ করে চলেছেন। নারীরা অদম্য শক্তিতে এগিয়ে চলেছে। সামিয়া ও ফাতেমার স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব নিয়েছে ছাত্রলীগ। আমরাও চাই তাদের মেধা দিয়ে তারা বড় কিছু হোক। এই দুই মেধাবীর খরচ আমরা বহন করব
Leave a Reply