কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে গ্রামগঞ্জেও। প্রচন্ড খরার কারণে গত বিশ দিন যাবৎ কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের চার গ্রামে প্রায় চারশ’ অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। ফলে বিশুদ্ধ পানি সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে অর্ধসহস্রাধিক পরিবার সদস্যরা। আরো বিভিন্ন স্থান থেকেও অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না বলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রচন্ড খরার কারণে পুকুর, খাল-বিল, নদী-নালায় পানি শুকিয়ে গেছে। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অগভীর নলকূপ সমূহেও পানি উঠছে না। ইতিপূর্বে কমলগঞ্জের অগভীর নলকুপ সমূহে কখনো পানি না উঠার সংবাদ পাওয়া যায়নি। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন স্থানে গভীর নলকূপ স্থাপন করায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
বিগত প্রায় ২০ দিন যাবৎ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিউয়নের রামপুর, নারায়নক্ষেত্র, রায়নগর, রামচন্দ্রপুরসহ আশপাশ আরো কিছু এলাকার অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। ১৬০ ফুট পরিমাণ গভীর নলকূপেও পানি উঠছে না। বর্তমানে নানা স্থানে গভীর নলকূপ যেখানে ৫শ’ থেকে ৬শ’ ফুট পরিমাণ গভীর নলকূপ রয়েছে সেসব নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে। গভীর নলকূপের কারণেই অগভীর নলকূপ সমূহে পানি উঠছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন। তাছাড়া পুকুর, খালবিলেও পানি শুকিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ার কারণে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দূর-দূরান্তের বাড়িঘর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করলেও গোসল, বাথরুমের পানি পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নারায়নক্ষেত্র গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহান মিয়া, আইয়ুব আলী, আজিজুর রহমান, আব্দুল বাছিত খান, রামপুর গ্রামের শামীম মিয়া, রামচন্দ্রপুর গ্রামের রুশন মিয়া, বিনয় চক্রবর্তী বলেন- গত ১৫/২০ দিন যাবৎ আমাদের গ্রামের অধিকাংশ অগভীর নলকূপ সমূহে পানি উঠছে না। অনেক চাপাচাপি করেও পানি তোলা যাচ্ছে না। এতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। তাছাড়া গোসল ও বাথরুমের পানিরও তীব্র সমস্যা। তারা আরও বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে খাবারের জন্য নলকূপের বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করে আনতে হচ্ছে। তবে পুকুর, খাল-বিলে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পরিবার সদস্যদের জন্য গোসল ও বাথরুমের পানির সংকটে ভুগতে হচ্ছে।
মুন্সীবাজার ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য সুনীল মালাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইউনিয়নের রামপুর, নারায়নক্ষেত্র, রায়নগর ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের অধিকাংশ নলকুপে পানি উঠছে না। আমার বাড়ির নলকুপেও পানি না উঠার কারণে দু’একদিন পরে গোসল করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এসব গ্রামের প্রায় চারশ’ নলকুপে পানি উঠছে না এবং হাজারো পরিবার সদস্যরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সুজন সরকার বলেন, আসলে এখন খরার সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে অথবা ভূমিকম্পের কারণেও কিছু কিছু স্থানে স্যালো হাতচাপা নলকূপ-৬ নম্বরে পানি উঠে না। হয়তো ওয়াটার লেভেল নিচে নেমে গেছে। তিনি আরও বলেন, এরকম অভিযোগ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে শোনা গেছে।
Leave a Reply