মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় স্বামী ও শাশুড়ীকে ফাঁসাতে দুই মাসের শিশু আল-আমিনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে গৃহবধু লাবনী বেগম (২৫) এর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০নং দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের পূর্ব দোহালিয়া রামকাটার টিলা গ্রামে পারিবারিক ঝগড়াকে কেন্দ্র করে স্বামী আব্দুল মতিন (৩০) ও তার শাশুরী মোছাঃ হাছনা বেগম (৪৮) সায়েস্তা করতেই এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর পারিবারিক ঝগড়াকে কেন্দ্র করে স্বামী আব্দুল মতিনের বাড়ীতে জনসম্মুখে ঘরের টিনের সাথে ওড়না বেঁধে গৃহবধু লাবনী বেগম গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করে।
এ সময় প্রতিবেশীরা ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করেন এবং তাকে বাঁধা সৃষ্টি করলে সে আত্বহত্যা করা থেকে বিরত থাকে। পরবর্তীতে ঘরের আসাববপত্র ও তার ব্যবহার উপযোগী কাপড় চোপড় ৩টি প্লাষ্টিকের বস্তায় ভরে শিশু সন্তান আল-আমিনকে সাথে নিয়ে একটি সিএনজি গাড়ী যোগে তার বাবার বাড়ী গাংকুলে চলে যায়। এর পর দিন ২৩ অক্টোবর শিশু আল-আমিন-কে মুমুর্ষ অবস্থায় বড়লেখা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় স্বামী আব্দুল মতিন (৩০), তার শাশুড়ী মোছাঃ হাছনা বেগম (৪৮) ও নজরুল ইসলাম (৪২) কে অভিযুক্ত করে বড়লেখা থানায় হত্যা মামলা (নং- ১৩, তারিখ ঃ২৪/১০/২০২২ইং) দায়ের করেন। স্বামী ও শাশুড়ী মিলে হত্যা করেছেন মর্মে অভিযোগ তুলেন গৃহবধু লাবনী। এ ঘটনায় পুলিশ আব্দুল মতিনকে গ্রেফতার করে এবং শাশুড়ীকে আদালতে হাজির হলে আদালত তাকেও কারাগারে প্রেরণ করে। বর্তমানে মা-ছেলে দু‘জন কারাগারে রয়েছেন।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে প্রত্যক্ষদর্শী নিয়ারুন বেগম, আয়রা বেগম, নাজমা বেগম, খয়রুল ইসলামগংরা জানান- লাবনী বেগমের পূর্বের স্বামী ত্যাগ করে আগর ব্যবসায়ী আব্দুল মতিনের সাথে চলে যান। তার ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। কিছুদিন যাবৎ লাবনী অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হলে স্বামী আব্দূল মতিন ও তার শাশুড়ী মোছাঃ হাছনা বেগমকে জন্মের মত শিক্ষা দিবে বলে হুমকি দিয়ে সে আত্বহত্যার চেষ্টা করে।
সেখানে ব্যর্থ হয়ে স্বামী ও শাশুড়ীকে ফাঁসাতে নিজের শিশুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এসব মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর ধারণকৃত ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়- লাবনী সকলের সম্মুখে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করছে। এর কিছু সময় পর লাবনীর মা সুয়ারুন বেগম ও তার ভাই জাহেদ আহমদকে সাথে নিয়ে ঘরের আসাববপত্র প্লাষ্টিকের বস্তায় ভরে শিশু সন্তান আল-আমিনকে সাথে নিয়ে একটি সিএনজি গাড়ী যোগে তার বাবার উদ্দেশ্যে চলে যায়। এ সময় শিশু আল-আমিন সুস্থ অবস্থায় ছিল। প্রতিবেশী শিশু ছেলে কোলে করে আদর-সোহাগ করে গাড়ীতে উঠিয়ে দিচ্ছেন।
Leave a Reply