মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজার জেলায় টানা দীর্ঘদিন তীব্র খরার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে দেখা মিললো কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির। পরিমাণে এ বৃষ্টিপাত অল্প হলেও জনমনে কিছুটা হলে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এরপর শুক্রবার ৯ জুন ভোর ৫টা থেকে টানা কয়েক ঘন্টা এবং রবিবার দুপুরে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত একটানা বৃষ্টি ঝরছে। টানা ৩ দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে প্রাকৃতিক রুক্ষতা দূর হয়ে গাছ-গাছালিতে সবুজ প্রাণ ফিরে এসেছে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানসহ জেলার সব গুলা চা বাগানে।
রবিবার ১১ জুন কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা বাগান ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার এমআরখান চা বাগানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ খরার পর স্বস্তির বৃষ্টি পেয়ে শুষ্ক চা বাগানে এখন অনেকটা সবুজের সমারোহ। বৃষ্টিধারা গায়ে মেখে চা বাগানের পুরো সেকশনে চোখ মেলেছে দু’টি পাতা একটি কুঁড়িরা।
এই প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাত চা বাগানের জন্য অনেক উপকারি বলে জানিয়েছেন চা বাগান সংশ্লিষ্টরা। চা বাগানের মালিকরা বলেন, দীর্ঘ খরার পর এই বৃষ্টি যেন ‘আশীর্বাদ’ হিসেবেই এসেছে।
চা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কয়েক মাসে তীব্র খরা এবং নানা রোগের কারণে চা উৎপাদন মারাত্মক হ্রাস পেয়েছিলো। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে লাল মাকড়সার আক্রমণসহ পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। সব মিলিয়ে মৌসুমের শুরুতে অর্ধেকের কম উৎপাদন হচ্ছে চা বাগানে।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ও অধিক তাপমাত্রার কারণে বাগানে নতুন পাতা না আসায় উৎপাদন কমে গিয়েছিল। নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণ এখন প্রায় সব চা বাগানেই বিদ্যমান ছিল।
তীব্র খরার কারণে চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন চা বাগানের ইরিগেশন (সেচ) দিয়েও চা গাছগুলোকে শতভাগ রক্ষা করতে পারছিলেন না। প্রচন্ড দাবদাহের পর টানা বৃষ্টি চা শিল্পের জন্য সুফল বয়ে এনেছে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে চা গাছগুলো তার আপন সজিবতা ফিরে পেয়েছে। এখন চা গাছে দ্রুত নতুন কুঁড়ি আসবে। প্লাকিং শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার ওপরে চা উৎপাদন হবে।
Leave a Reply