আব্দুল বাছিত খানঃ
মৌলভীবাজারে মিস কিলিংয়ে আইনজীবী সুজন মিয়া খুনের ৫ আসামী গ্রেফতারের দু‘দিন পর আরও তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করার ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ৮ আসামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর আগে গত ১০ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এম. কে, এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন লোহমর্ষক ওই ঘটনার ৫ আসামীকে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে রহস্য উন্মোচনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
আজ (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সুজন খুনের ঘটনায় আরও তিন আসামী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার হাসানপুর গ্রামের আব্দুল আউয়াল এর ছেলে সাইদুল ইসলাম সাবেল (২১) , চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের বলিয়ারভাগ গ্রামের মো: শাহীন মিয়া ও শহরের গীর্জাপাড়া এলাকার মাহবুবুর রহমান মোজাম্মিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল ইসলাম জানান, ১০ এপ্রিল বিকেলে সাইদুল ইসলাম সাবেল ও ১২ এপ্রিল ভোরে শাহীন ও মাহবুবকে তাদের নিজ নিজ বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত ৩ আসামীর মধ্যে একজনকে ১১ এপ্রিল আর আরেকজনকে ১২ এপ্রিল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে গ্রেফতার ৩জনের একজন শিশু বয়সী হওয়ায় একই দিন তাঁকেও আইনানুযায়ী শিশু আদালতের মাধ্যমে গাজীপুরের শিশু শোধানাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তদন্তকারী ওই কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় আগে গ্রেফতারকৃত ৫ আসামী হলেন, সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার বাসিন্দা মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), রঘুনন্ধনপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফ মিয়া (২৭), দিশালোক এলাকার হোসাইন আহমদ সোহান (১৯), রাজনগর উপজেলার মাথিউরা চা বাগানের লক্ষণ নাইডু (২৩) ও নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার বাসিন্দা আব্দুর রহিম (১৯)।
ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছিলেন, খুনের পেছনের মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব তার পাশের বাড়ির অগ্রণী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত মিসবাহের সঙ্গে পূর্বশত্রুতা ছিল। ওই শত্রæতার প্রতিশোধ নিতে ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে মুজিব। মুজিবের পূর্বপরিচিত লক্ষণের মাধ্যমে এসব খুনির সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং মুজিব মোবাইল ফোনে মিসবাহের ছবি পাঠায়। ৬ এপ্রিল রাত ১০ টা ৫০ মিনিটের সময় শহরর পৌরসভার সামনের তামান্না ফুসকার দোকানে আইনজীবী সুজন মিয়াকে মিসবাহ ভেবে ভুল করে তাকে ভিডিও কলে দেখিয়ে নিশ্চিত করে খুনিরা। এ সময় মুজিব ফোনে নির্দেশ দেন ছবির সঙ্গে সুজনের মিল আছে। এরপরই চেয়ারে বসা অবস্থায় সুজন মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ১০ থেকে ১২ জন দুষ্কৃতিকারী। পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সমস্ত তথ্য প্রমান পুলিশের কাছে রয়েছে এবং মিসবাহ এর সাথে যে মুজিব এর বিরোধ আছে তার তথ্যও আমরা সংগ্রহ করেছি। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ওই ঘটনার মূল আসামী শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, তাঁকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply